রফিক মাহমুদ উখিয়াঃ
নির্বাচনের ঢাক বাজছে—রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে সর্বত্র। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সরকার পতনের আন্দোলনের মাঝে ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এদিকে তৎপরতা শুরু হয়েছে বিভিন্ন আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘিরে। কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের রাজনীতি নিয়েও চলছে জোর আলোচনা। কে হবেন আগামীর কান্ডারি?
ভোটারদের হিসাব ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব
উখিয়া-টেকনাফের সমন্বয়ে গঠিত কক্সবাজার-৪ আসনটি গঠিত ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩,২৮,৩৮৯ জন, যার মধ্যে উখিয়ায় ১,৪৭,৩১০ এবং টেকনাফে ১,৮১,০৭৯ জন।
এই আসনটি ‘লক্ষ্মী আসন’ হিসেবেই পরিচিত। স্বাধীনতার পর থেকে যে দলের প্রার্থী এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, সেই দলই গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
পিছনে ফিরে দেখা – কক্সবাজার-৪-এর রাজনৈতিক ইতিহাস
১৯৭৩: অধ্যক্ষ ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী (আ.লীগ) – প্রথম এমপি
১৯৭৯: শাহজাহান চৌধুরী (বিএনপি) – সবচেয়ে কম বয়সে এমপি নির্বাচিত (২৬ বছর)
১৯৮৬: আ হ আ গফুর চৌধুরী (জাতীয় পার্টি)
১৯৮৮: আবদুল গনি (স্বতন্ত্র, জাতীয় পার্টি সমর্থিত)
১৯৯১, ১৯৯৬ (৬ষ্ঠ), ২০০১: শাহজাহান চৌধুরী (বিএনপি)
১৯৯৬ (৭ম): অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী (আ.লীগ)
২০০৮, ২০১৪: আবদুর রহমান বদি (আ.লীগ)
২০১৮: ( বিনা ভোটে) শাহীন আক্তার চৌধুরী (আ.লীগ, বদির স্ত্রী)
এই আসনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—রাজনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন এক ব্যক্তি: সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী।
শাহজাহান চৌধুরী—বিএনপির অবিসংবাদিত কান্ডারি
৪ বার নির্বাচিত, ৭ বার প্রার্থী। কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি। একসময় জাতীয় সংসদের হুইপ এবং স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় এই নেতা ছিলেন এক সময়ের ইউপি চেয়ারম্যান, পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতির পরিচিত মুখ।
** শিক্ষা জীবন ** চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে বিএ (অনার্স) শেষ করেন ১৯৭৫ সালে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে তাঁর ভূমিকা ওয়ান-ইলেভেনসহ কঠিন সময়গুলোতে ছিল সাহসিকতার পরিচায়ক।
শাহজাহান চৌধুরীর অভিন্ন বিকল্প কোথায়?
দলের তৃণমূল, নেতাকর্মী, ভোটার—সব মহলের চাওয়া একটাই: “শাহজাহান চৌধুরীই বিএনপির যোগ্য প্রতিনিধি”। তার ক্লিন ইমেজ, সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা, বাচনভঙ্গি, এবং মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে।
বিএনপির স্থানীয় নেতাদের ভাষায়, “সুষ্ঠু ভোট হলে আজও উখিয়া-টেকনাফে শাহজাহান চৌধুরী জয়ের সিঁড়ি গড়বেন।”
রাজনীতির একক দৃষ্টান্ত
কক্সবাজার জেলায় বর্তমানে তিন দশকের বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন যে ক’জন প্রবীণ নেতা রাজনীতিতে টিকে আছেন, তাদের শীর্ষে অবস্থান করছেন এই ‘রাজনীতির দিকপাল’। তিনিই উখিয়া থেকে নির্বাচিত একমাত্র সংসদ সদস্য। শাহজাহান চৌধুরী মানেই উখিয়া-টেকনাফের বিএনপি।
নির্বাচনী বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিএনপির নেতাদের মতে, ১৯৯৬ সালে ভ্রাতৃঘাতী প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রতারণামূলক নির্বাচন এবং ২০১৮ সালে রাতে ভোট দেয়ার কারণে পরাজিত হন শাহজাহান চৌধুরী। কিন্তু যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিলো স্বচ্ছ, সেখানেই জয় ছিলো তার।
সুশীল সমাজের মতে, “সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হলে, শাহজাহান চৌধুরীকে হারানো হবে পাহাড় ডিঙানোর মতোই কঠিন।
সময়ই বলবে, ইতিহাস কি আবারও তাকে বিজয়ের মুকুট পরাবে? ** পারিবারিক জীবন ** শাহজাহান চৌধুরী হচ্ছেন-উখিয়া উপজেলার অভিবক্ত রাজা পালং ইউনিয়নে তিনি ১৯৫২ সালের ৩১ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রামসাবেক চেয়ারম্যান ও তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য আলহাজ্ব আবুল কাশেম চৌধুরী ও নুরজাহান বেগম চৌধুরী’র জ্যেষ্ঠ সন্তান। বৃহত্তর চট্টগ্রামে সুপরিচিত রাজনীতিবিদ শাহজাহান চৌধুরী’র অন্যান্য ভাই বোনেরা হলেন-উখিয়ার রাজা পালং ইউনিয়ন পরিষদের একটানা ৫ বার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ কামাল চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির ৪ বার নির্বাচিত সাবেক সভাপতি, সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজকর্মী শাহনেওয়াজ চৌধুরী ও কনিষ্ঠ ভ্রাতা উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উখিয়া উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী। তাদের ৩ বোন হলেন-কায়সার জাহান চৌধুরী, জোসনা জাহান চৌধুরী ও ফাতেমা জাহান চৌধুরী। ** উনার প্রতিষ্ঠিত ** বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শাহজাহান চৌধুরী উখিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, টেকনাফ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, উখিয়া আবুল কাশেম চৌধুরী-নুরজাহান বেগম চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, অনেক মসজিদ, মাদ্রাসা সহ অনেক শিক্ষা, সামাজিক, ধর্মীয়, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক ও কল্যানকর প্রতিষ্ঠানের সফল প্রতিষ্ঠাতা ও উদ্যেক্তা।** বৈবাহিক ও ব্যক্তিগত ** জীবনে অত্যন্ত স্বজ্জন, সদালাপী, অমায়িক ও বন্ধু বৎসল শাহাজাহান চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. লুৎফুল কবিরের কন্যা শাহীন জাহান চৌধুরী’র সাথে ১৯৭৫ সালের ২৯ জুলাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শাহজাহান চৌধুরী-শাহীন জাহান দম্পতির প্রথম পুত্র রিয়াদ মাহমুদ চৌধুরী, একমাত্র কন্যা এডভোকেট নাজিয়া জাহান চৌধুরী সম্পা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী (শি.) এবং ২০১২ সালে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত নির্বাহী সদস্য ছিলেন। কনিষ্ঠ সন্তান তারেক মাহমুদ চৌধুরী রাজীবও একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও তরুন রাজনীতিবিদ। একজন তুখোড় ক্রীড়ামোদী শাহজাহান চৌধুরী এখনো প্রতিদিন সন্ধ্যায় নিয়মিত লং টেনিস খেলেন।
অসাধারণ কর্মীবান্ধব, দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী শাহাজাহান চৌধুরী এ বয়সেও এখনো একজন টগবগে তরুণের মতো দাপিয়ে চলাফেরা করেন। উখিয়া ও টেকনাফের জাতীয়তাবাদী পরিবারের প্রতিটি সদস্যের আস্থা ও বিশ্বাসের অসাধারণ কর্মীবান্ধব, দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী শাহাজাহান চৌধুরী এখনো একজন টগবগে তরুণের মতো দাপিয়ে চলাফেরা করেন। উখিয়া ও টেকনাফের জাতীয়তাবাদী পরিবারের প্রতিটি সদস্যের আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা এবং অভিবাবক হচ্ছেন-সদা চিন্তামুক্ত ও হাস্যজ্জ্বোল শাহজাহান চৌধুরী। নিরংহকার, পরিশ্রমী, সাদামাটা চলতে অভ্যস্থ শাহজাহান চৌধুরীকে কখনো ক্লান্তি ও হতাশা গ্রাস করেতে পারেননি। সহজে ও কম সময়ে যে কাউকে আপন করে নেওয়ার মহৎ গুনাবলী শাহজাহান চৌধুরীকে আপন মহিমায় উদ্বাসিত করেছে সর্বত্র। অসাধারণ আশাবাদী ও গঠনমুলক চিন্তা চেতনার মানুষ হিসাবে সবার কাছে সুপরিচিত রাজনীতিবিদ শাহজাহান চৌধুরী। উখিয়া ও টেকনাফের জাতীয়তাবাদী পরিবারের প্রতিটি সদস্যের আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা এবং অভিবাবক হচ্ছেন-সদা চিন্তামুক্ত ও হাস্যজ্জ্বোল শাহজাহান চৌধুরী। অমায়িক সজ্জ্বন, বন্ধুবৎসল শাহজাহান চৌধুরীকে কখনো ক্লান্তি ও হতাশা তাঁকে গ্রাস করেতে পারেননি। সহজে ও কম সময়ে যে কাউকে আপন করে নেওয়ার মহৎ গুনাবলী শাহজাহান চৌধুরীকে আপন মহিমায় উদ্বাসিত করেছে সর্বত্র। অসাধারণ আশাবাদী ও গঠনমুলক চিন্তা চেতনার মানুষ হিসাবে সবার কাছে সুপরিচিত শাহজাহান চৌধুরী।. নির্বাচনের ডামাডোলে যখন বিএনপি এখনো সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায়, তখন উখিয়া-টেকনাফে প্রার্থী নিয়ে নেই কোনো দ্বিধা। বিএনপির একক প্রার্থী, বিএনপির ‘পুরনো অভ্যস্ত যোদ্ধা’, জনপ্রিয়, গ্রহণযোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতা শাহজাহান চৌধুরীই হতে পারেন পরবর্তী উখিয়া - টেকনাফের কান্ডারী।
0 Comments